ডেইলি শেয়ারবাজার ডেস্ক: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক্সপ্রেসওয়েতে গুলিতে নিহত শাহিদা আক্তার (২২) নামের ওই তরুণী আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তাই তিনি প্রেমিক তৌহিদ শেখকে (২৮) বিয়ে করতে চাপ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই পরিকল্পিতভাবে শাহিদাকে মাওয়া এনে থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন তৌহিদ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলম সরকার এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, শাহিদাকে গুলি করে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তৌহিদ শেখ। আমরা তাকে (তৌহিদকে) হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তৌহিদ-শাহিদার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের জেরে শাহিদা আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তবে সম্প্রতি প্রেমিকাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছিলেন। এর মধ্যে তৌহিদ তার পরিবারের পছন্দের অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বিষয়টি শাহিদা বুঝতে পেরে তৌহিদকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিদাকে চিরতরে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার রাতে শাহিদাকে ফোনে ওয়ারীর বাড়ি থেকে মাওয়ায় ইলিশ খাওয়ার কথা বলে ডেকে আনেন তৌহিদ। খাওয়া শেষে রাতভর তারার মাওয়া এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। শনিবার ভোরে শ্রীনগর দোগাছি এলাকার এক্সপ্রেসওয়েতে শাহিদাকে নিয়ে আসেন তৌহিদ। সেখানেই সঙ্গে থাকা ওয়ারী থানা থেকে লুট করা রিভলভার দিয়ে প্রেমিকাকে গুলি করে হত্যা করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, হত্যার পর তৌহিদ ঢাকায় চলে যান। যাওয়ার আগে রিভলভারটি কেরানীগঞ্জের বটতলী বেইলি সেতুর নিচে ফেলে যান। পরে তৌহিদ পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় সোমবার রাতে ঢাকা থেকে লঞ্চে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় বিষয়টি জানতে পেরে ভোলার ইলিশাঘাট এলাকায় লঞ্চ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
উল্লেখ্য, নিহত শাহিদা ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার বেগুনবাড়ির বরিবয়ান এলাকার প্রয়াত আবদুল মোতালেবের মেয়ে। তিনি ঢাকার ওয়ারী থানার যুগিনগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। গ্রেপ্তার তৌহিদ শেখ তন্ময় রাজধানী ঢাকার ওয়ারীর বনগ্রাম এলাকার প্রয়াত শফিক শাহর ছেলে।
এর আগে গত শনিবার দুপুরে ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সমসপুর এলাকার দোগাছি সার্ভিস সড়ক থেকে শাহিদা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পাশে কয়েকটি গুলির খোসা পড়ে ছিল। সেদিন দুপুর ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে শ্রীনগর থানায় নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে শাহিদার মুঠোফোনে থাকা নম্বরের মাধ্যমে তাঁর মায়ের নম্বর পাওয়া যায়। বিকেলে জরিনা বেগম এসে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর নিহত তরুণীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাটি করেন। পরে রোববার সকালে ওই মামলায় একমাত্র নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয় তৌহিদকে। রোববার রাতে ময়নাতদন্ত শেষে শাহিদার লাশ ময়মনসিংহের বরিবয়ান গ্রামে দাফন করা হয়।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/এম আর.