ডেইলি শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের ইউনিয়ন ক্যাপিটালের বর্তমান অবস্থা এমন হয়েছে যে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। লোকসানের তলে ডুবে যাওয়া, রেগুলেটরি ক্যাপিটালের বিশাল পরিমাণ শর্টফল থাকা, সম্পদের চেয়ে দায় অনেক বেশি হয়ে এনএভি নেগেটিভ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে কোম্পানিটি অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। আরটিকে টিকিয়ে রাখতে নতুন ফান্ড প্রয়োজন বলে মনে করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনের নিরীক্ষকের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সমাপ্ত অর্থবছরে ইউনিয়ন ক্যাপিটালের নেট লোকসান হয়েছে ১৪৩ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ১৮০ টাকা এবং রিটেইন্ড আর্নিংস নেগেটিভ ২৮৯ কোটি ৯৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪২৯ টাকা। কোম্পানির সম্পদের চেয়ে দায় অনেক বেশি হয়েছে। সম্পদের চেয়ে দায়ের পরিমাণ ৭২ কোটি ২১ লাখ ৬২ হাজার ৬০০ টাকা বেশি হয়ে শেয়ার প্রতি নেট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪.১৮ টাকা (নেগেটিভ), শেয়ার প্রতি লোকসান ৮.৩২ টাকা, ক্যাপিটাল এডিকুয়েসি রেশি ৩.০৫% (নেগেটিভ)।
এদিকে রেগুলেটরি ক্যাপিটাল রাখার যে আইন রয়েছে তা ভঙ্গ করেছে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। আইন অনুযায়ী কোম্পানিটির রেগুলেটরি ক্যাপিটাল থাকার কথা ১৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ২৫ হাজার ৮৫৪ টাকা। কিন্তু সেখানে ইলিজিবল ক্যাপিটাল হচ্ছে ৫১ কোটি ৫১ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৭ টাকা। এক্ষেত্রে মূলধনের শর্টফল হচ্ছে ২২০ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ১৭১ টাকা।
ডিএসই থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০১৯ সাল থেকে টানা লোকসান রয়েছে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। ২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ১৭২ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মোট ১৭ কোটি ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৪৩টি শেয়ারের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ৩৫.২০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৬.৩৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৮.৪৫ শতাংশ। ১০ টাকা ফেসভ্যালুর এ কোম্পানির শেয়ার দর ৭ টাকার ঘরে অবস্থান করছে।
কোম্পানির বর্তমান অবস্থা সম্পকে জানতে ইউনিয়ন ক্যাপিটালের চীফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) বেলায়েত হোসন ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকমকে জানান, আমাদের কোম্পানির অবস্থা এতো খারাপ হওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আমাদের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির মার্চেন্ট ব্যাংককে ৪২২ কোটি টাকার ওপরে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শেয়ারবাজারের অবস্থা খারাপ থাকায় সেখান থেকে কোন ইনকাম জেনারেট হচ্ছে না। মূলত সাবসিডিয়ারি কোম্পানির অবস্থা খারাপ থাকায় মূল কোম্পানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এর থেকে বের হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আমাদের প্রয়োজন সরকারের পলিসি সাপোর্ট পাওয়া। যদি নতুন ফান্ড পাওয়া যায় অথবা নতুন বিজনেস পাওয়া যায় তাহলে এর থেকে বের হওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/নি.