Saturday, January 25, 2025
spot_img
spot_imgspot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

নন-লাইফ বীমা শিল্প বিকাশে কিছু বাস্তব ভাবনা

নন-লাইফ বীমা শিল্পের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে আমার মনে হয় অর্থাৎ আমার
ব্যক্তিগত মতামত, তা হলো কিছু নিয়ম-নীতি সংশোধন করা একান্ত প্রয়োজন। এই
মুহুর্তে বাংলাদেশের বীমা খাত জাতীয় অর্থনীতিতে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে
সক্ষম হচ্ছে না। যাহা ভবিষ্যৎ বীমা শিল্পের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

নন-লাইফ বীমা শিল্পের বিকাশের জন্য যে সমস্যা সমূহ :
 নির্ধারিত এজেন্ট কমিশনের অতিরিক্ত কমিশন প্রদান।
 বিশ্ব বীমা বাজারের সাথে আমাদের বীমার প্রিমিয়াম হার অনেক বেশী।
 নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে এজেন্ট প্রথা বিলুপ্ত করা প্রয়োজন।
 নন-লাইফ বীমা খাতে পণ্যের স্বল্পতা রয়েছে।
 নন-লাইফ বীমার ক্ষেত্র বা পরিধি বিস্তারের জন্য বীমাকৃত খাত সমূহ চিহ্নিত করে
তাহা বাধ্যতামূলক করা একান্ত প্রয়োজন।
 নন-লাইফ বীমা আইনের কিছু ধারা সংশোধনপূর্বক নন-লাইফ বীমা শিল্পের
উন্নয়নের জন্য বাস্তবমূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। উপরোক্ত সমস্যা সমাধান এবং নন-লাইফ বীমা শিল্পের বিকাশের জন্য নিন্মে আমার কিছু ব্যক্তিগত মতামত উপস্থাপন করছি-
 বে-সরকারী খাতের নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স শিল্প বিকাশের জন্য সরকারী সম্পত্তির বীমা শুধুমাত্র সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের উপর অর্পিত করা একান্ত প্রয়োজন। এতে
বীমা ক্ষেত্রে সুষ্ঠ শৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।
 সরকারী সম্পত্তির বীমার প্রিমিয়াম অর্থাৎ ৫০ শতাংশ সকল বে-সরকারী নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর মধ্যে সমহারে বিতরণ করার যে প্রচলন রয়েছে তা বিলুপ্ত করা প্রয়োজন।

 নন-লাইফ বীমা শিল্পের সুষ্ঠ এবং স্বচ্ছ বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশে নন-ট্যারিফ
মার্কেট বিবেচনা করা সময়োপযোগী হবে। কারণ বাংলাদেশে ট্যারিফ মার্কেট এর হার বিশ্ব বাজার থেকে অনেক বেশী। যার ফলে অতিরিক্ত কমিশন প্রদানের প্রবনতার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া নন-ট্যারিফ মার্কেট এর ফলে আমরা বিশ্বের বীমা সেবার সহিত প্রতিযোগিতামূলক বীমা সেবা প্রদানে সক্ষম হবো।

 পুন:বীমা এর ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রচলিত আইন অর্থাৎ ৫০% বাধ্যতামূলক সাধারণ
বীমা কর্পোরেশনের সাথে পুন:বীমা করতে হবে বাকি ৫০% ওভারসিস মার্কেট
এ করা যায়, তা হ্রাস করে ৩০% সাধারণ বীমা কর্পোরেশন এর সাথে এবং ৭০%
ওভারসিস মার্কেট এ করার বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে ৭০% এর ক্ষেত্রে বিকল্প
থাকতে পারে যে কোন কোম্পানী তাহা সাধারণ বীমা কর্পোরেশন অথবা
বিদেশী পুন:বীমাকারীদের সাথে পুন:বীমা করতে পারবে।

 যে কোন নন-লাইফ বীমার নতুন পণ্য যে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী উদ্ভাবন করবে
তাকে প্রথমে বাজারজাত করার সুযোগ দিতে হবে এবং যদি সফলতা আসে তবে
বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ থেকে উক্ত কোম্পানী নতুন উদ্ভাবিত পণ্য এর অনুমোদন নিবে। এতে যেমন নিয়ম-নীতির বাধ্য বাধকতা হ্রাস পাবে, তেমনই বিভিন্ন কোম্পানী নতুন পণ্য উদ্ভাবনে উৎসাহ পাবে। মূলত বীমা দাবী যে কোন নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর স্বক্ষমতা এর পরিমাপের জন্য প্রধান মানদন্ড। তাই বর্তমানে প্রচলিত বীমা দাবী নিস্পত্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের তথ্যাদি ও নথি-পত্র প্রদানের যে প্রক্রিয়া রয়েছে তা সহজীকরণ একান্ত প্রয়োজন এবং তা সম্ভব। নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর বীমাপত্র প্রসারে প্রিমিয়াম পরিশোধে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। অর্থাৎ আমার ব্যক্তিগত মতামত প্রিমিয়াম পরিশোধে পরবর্তী দিনে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকরণের যে আইন আছে তা কিছুটা শিথিল করে নূন্যতম ০১ (এক) মাস করা প্রয়োজন এবং ০১ (এক) মাসের পর যদি প্রিমিয়াম পরিশোধ না হয় তবে প্রতিদিনের জন্য বিবেচনাযোগ্য জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে।

উপরোক্ত বিষয়াদি পর্যালোচনা ও বিবেচনা পূর্বক আমরা যদি সুষ্ঠ ও বাস্তবসম্মত
বীমা কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য নিয়ম-নীতি সংশোধনপূর্বক নন-লাইফ বীমা শিল্প
পরিচালনায় সক্ষমতা আনতে পারি, তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর উপর গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং সেই সাথে নন-লাইফ বীমা শিল্পের অভূতপূর্ব
বিকাশ ঘটবে। যাহা জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকার প্রতিফলন ঘটবে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সকলের সম্মিলিত বাস্তব চিন্তাধারা নন-লাইফ বীমা
শিল্পের বিকাশ ঘটাতে সম্ভব।

লেখক: আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরী,
মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা
বাংলাদেশ জেনারেল ইনসিওরেন্স কোং লিঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles