Saturday, January 25, 2025
spot_img
spot_imgspot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

ভেঙ্গে পড়েছে পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা

মাসুদ হাসান: পুরোপুরিভাবে বিশৃঙ্খল একটি পুঁজিবাজার। গত ২০ বছরে এমন বিশৃঙ্খল পুঁজিবাজার আগে দেখি নাই। ন্যূনতম শৃঙ্খলা নেই বর্তমান পুঁজিবাজারে।

বাজারে A,B,Z ক্যাটাগরির কোম্পানি রয়েছে। যে সকল কোম্পানি ন্যূনতম ১০% ডিভিডেন্ড দেয় সেই সকল কোম্পানি A ক্যাটাগরিতে থাকে। আর যে সকল কোম্পানি ডিভিডেন্ড দিতে পারে না সেগুলো Z ক্যাটাগরিতে থাকে। অথচ বর্তমানে ডিভিডেন্ড না দিয়েও বছরের পর বছর অনেক কোম্পানি A এবং B ক্যাটাগরিতে লেনদেন হচ্ছে। সব যেন লেজেগোবরে। যেমনঃ ডেল্টা স্পিনার্স, ইয়াকিন পলিমার, রিজেন্ট টেক্সটাইল, রিং শাইন টেক্সটাইল, সেন্ট্রাল ফার্মা, ইনটেক অনলাইন, ওয়েস্টার্ন মেরিন।

অনেক গুলো কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেও বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না। ১ বছর অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিনিয়োগকারীদের একাউন্টে এখন পর্যন্ত ক্যাশ ঢুকে নাই। নিয়ম অনুযায়ী এজিএম হওয়ার ১ মাসের মধ্যে ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিনিয়োগকারীদের এক্যাউন্টে পাঠাতে হবে। অথচ গত বছর ফরচুন সুজ, লাভেলো, ল্যুব-রেফ, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, সাফাকো স্পিনিং ও প্যাসিফিক ডেনিম, ওরিজা এগ্রো, বিডি পেইন্টস, মামুন এগ্রো ও কৃষিবিদ ফিড কোম্পানি গুলো ডিভিডেন্ট ঘোষণা করেও বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দেয়নি। গত ২০ বছরে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে এমনটি ঘটেনি। এই ভাবে যদি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড না দেয়ার প্র্যাকটিস স্টক এক্সচেঞ্জে শুধু হয় তাহলে তা হবে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভয়ঙ্কর।

বছরের পর বছর ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না, কোম্পানির কোন অস্তিত্ব নেই এমন অনেক কোম্পানি এখনও পুঁজিবাজারে লেনদেন হচ্ছে। অথচ এগুলো অনেক আগেই তালিকাচ্যুত হবার কথা ছিল। উল্টো তালিকাচ্যুত কোম্পানি গুলো বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য তৈরি করে মূল বাজারে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যা গত ২০ বছরের ইতিহাসে আগে দেখা যায়নি।

ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফিরে আসার পর প্রথম ৩ বছর রাইট শেয়ার ইস্যু করা যায় না, প্রথম ৩ বছর পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি করা যায় না, প্রথম ৩ বছর বোনাস শেয়ার ইস্যু করা যায় না। অথচ এই নিয়ম খোদ বিএসইসি ভঙ্গ করে ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফিরে আসা কোম্পানি গুলোকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। যেন নিয়ম ভাঙ্গতে বিএসইসি সবার আগে।

প্রায় ১ বছর হতে চললো ফ্লোর প্রাইজ দেয়া হয়েছে অথচ যে শেয়ার গুলো বাজারের শক্তি সে গুলো আজ পর্যন্ত ফ্লোর থেকে উঠে দাঁড়াতে পারেনি। অথচ জাপানি কোম্পানির ধুয়া তুলে এমারেল্ড অয়েল ১৫ টাকা থেকে এখন ১৮০ টাকা। শুনলে অবাক লাগবে এই কোম্পানির সম্পদ ঋণাত্মক। পুরো বাংলাদেশ ঘুরেও আপনি বাজারে একটি স্পন্দন তেলের বোতল খুজে পাবেন না।

বর্তমানে পুঁজিবাজারে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। বিএসইসি, ডিএসই, সিডিবিএল এর কর্মকর্তারা দুুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে সমকাল সহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় আমরা প্রমান সহ রিপোর্ট দেখতে পেয়েছি। বন্ধ, দুর্বল কোম্পানি গুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে সাধারন বিনিয়োগকারীদের সেই সব কোম্পানির প্রতি প্রলুব্ধ করার চেষ্টা চলছে। বাজারে লেনদেনে শীর্ষে থাকে বছরের পর বছর বন্ধ থাকা কোম্পানি গুলো। বিনিয়োগ শিক্ষা ভুলে বিনিয়োগকারীরা এখন ভালো-মন্দের বিচার করা ভুলে গেছে। সত্যিই এমন বিশৃঙ্খল পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীরা আগে দেখেনি।

 

ডেইলি শেয়ারবাজার ডট কম/মু.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles