ডেইলি শেয়ারবাজার ডেস্ক: ডেঙ্গু নিয়ে ২০২৩ সালে এক বিভীষিকাময় বছর পার করেছে দেশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ওই বছর জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে প্রাণ গেছে ১ হাজার ৭০৫ জনের। গত শীতে প্রকোপ একটু কমে এলেও এখন আবার ডেঙ্গু বাড়তে শুরু করেছে। গত জানুয়ারি থেকে গত সোমবার পর্যন্ত বছরের প্রথম প্রান্তিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছেন অন্তত ২০ জন। এর আগে কোনো বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ রূপ আর দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের, আক্রান্ত হয় ৮৪৩ জন। আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫২৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩৯ জন। একই সময়ে মারা গেছেন ২০ জন। এর মধ্যে ঢাকায় সাতজন এবং ঢাকার বাইরে ১৩ জন মারা গেছেন।
বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ার করেছেন, কার্যকর এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে না পারলে এবারও ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এডিস মশা নির্মূলে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধমূলক সমন্বয় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন কথা বলেন। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রোগীকেও দ্রুত হাসপাতালে আসার অনুরোধ থাকবে। কারণ দেরি করলে ঝুঁকি বাড়ে। সমন্বয় যেন ভালো হয়, তাই এ সভার আয়োজন করা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর বিটিআই (জৈব কীটনাশক) আমদানির ঠিকাদারি দেওয়া হয়েছিল; তবে তারা ঠিকভাবে কাজ করেনি। তারা মিসডিক্লারেশন করেছে। এ জন্য আমরা নিজস্বভাবে এবার বিটিআই আমদানি করব। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিটিআই বায়োলজিক্যালি উত্তম। এডিস মশার জন্য প্রতিটি দপ্তর ও সংস্থাকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘সব ডেঙ্গু রোগীকে সময়মতো চিকিৎসা দিতে হবে। চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠানো যাবে না। ২০২৩ সালের ডেঙ্গুতে নারী ও শিশু কেন বেশি মারা গেল, সেটি নিয়ে গবেষণা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে হবে ।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘করোনার মতো ডেঙ্গু প্রতিরোধে এ বছর আমরা আগেভাগে এই সমন্বয় সভার আয়োজন করেছি। আশা করছি, এ বছর সম্মিলিতভাবে কাজ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুহার অনেক কমিয়ে আনতে পারব।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/এম আর.