Thursday, April 24, 2025
spot_img
spot_imgspot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

কেন ভালো কোম্পানিগুলো ফ্লোর প্রাইজে?

২০০৯ সালে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিয়াউল হক খন্দকারকে সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। তিনি এসে প্রথমেই বাজারকে জঞ্জাল মুক্ত করেন। দেউলিয়া হয়ে যাওয়া, উৎপাদন বন্ধ, অস্তিত্ব বিহীন এমন ৬৮টি কোম্পানিকে মূল বাজার থেকে বের করে দেন। OTC মার্কেট তৈরি করে সেখানে দিয়ে দেয়া হয় দেওলিয়া হয়ে যাওয়া ৬৮টি কোম্পানিকে। যার জন্য মূল বাজারে ভালো কোম্পানিগুলোর চাহিদা বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে ইনডেক্স। সেই সাথে মানুষের মধ্যে পুঁজিবাজার নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়।

২০২০ সালে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি এসে প্রথম দিকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বললেও সময়ের সাথে সাথে তার আগ্রহের স্থানে জায়গা করে নেয় OTC তে থাকা শেয়ার গুলো। ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখা যায়, তার কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল দেউলিয়া হয়ে যাওয়া, উৎপাদন বন্ধ, অস্তিত্ববিহীন কোম্পানিগুলো।

OTC মার্কেট থেকে কিছু কোম্পানিকে মূল মার্কেটে আনা আবার সেই কোম্পানিগুলোকে বিশেষ ছাড় দেয়া যেমনঃ বোনাস এবং রাইট শেয়ারের অনুমোদন, মালিকদের শেয়ার বিক্রির অনুমতি দেয়া সহ সব কিছুই করেছে বিএসইসি। ATB মার্কেট চালু করা, দুর্বল কোম্পানি গুলোর পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি করার প্রজ্ঞাপন দেয়া সবই বিএসইসি করেছে মূলত দুর্বল কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ তৈরি করার জন্য।

২০০৯ সালে যেখানে ভালো কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা হয়েছিল সেখানে শিবলী সাহেব উল্টো কাজটি করে বসলেন। আর সে জন্যই শিবলী সাহেবের সময়কালে অর্থাৎ গত ২ বছরে দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ স্থানগুলো দখল করে আছে OTC থেকে আসা কোম্পানি গুলো। যেমনঃ সোনালী পেপার, মনোস্পুল পেপার, পেপার প্রোসেসিং।

অনেক সময় প্রতিষ্ঠিত ভালো কোম্পানিগুলো ডিভিডেন্ড, EPS নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সাথে লুকোচুরি করে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবার ১ বছর না যেতেই মীর আখতার, বারাকা পতেঙ্গা, এনার্জি প্যাক এর মতন সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম নিয়ে আসা কোম্পানিগুলো অফার প্রাইজের নিচে চলে গেছে। এই বিষয় গুলো নিয়ে বিএসইসিকে কখনও উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে ভালো কোম্পানিগুলো বিএসইসির দৃষ্টিসীমার বাহিরেই থেকে গেছে।

বর্তমানে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া, উৎপাদন বন্ধ, অস্তিত্ব বিহীন কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারনে ভালো কোম্পানিগুলোর চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে ভালো কোম্পানিগুলোর ক্রেতাই খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।

অনেকেই বলার চেষ্টা করছে বিদেশিরা ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছে তাই ভালো কোম্পানি গুলো ক্রেতা সংকটে ভুকছে। এটি একদম বাজে কথা। বর্তমানে ২৭৫টি কোম্পানি ক্রেতা শুন্য যা বাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানির দুই তৃতীয়াংশ। ফরেন সেল সর্বোচ্চ ৮-১০টি কোম্পানিতে থাকতে পারে, এর বেশি নয়। তাহলে ২৭৫টি কোম্পানি ক্রেতা শুন্য কেন?

এখন সিদ্ধান্ত বিএসইসিকে নিতে হবে তারা কি সত্যিকার অর্থেই বাজারকে ভালো করতে চায়? যদি ভালো করতে চায় তবে ভালো কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ তৈরি করতে হবে। অন্যথায় এই বাজার আর আলোর মুখ দেখবেনা।

লেখক:

তানভির আহমেদ,

বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক

 

ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/নি.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles