Tuesday, April 22, 2025
spot_img
spot_imgspot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

থানকুনি‘র উপকারিতা-অপকারিতা

ডেইলি শেয়ারবাজার ডেস্ক: ক্ষেতের ধারে, পুকুর পাড়ে কিংবা ডোবার পাশে বেড়ে ওঠা থানকুনি উদ্ভিদের রয়েছে বহুগুণ। থানকুনির পাতা ক্ষত সারাতে, পেটের অসুখ দূর করতে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি এমনকি সৌন্দর্যচর্চায় প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও এই পাতার রস খুবই উপকারী।

থানকুনি পাতার উপকারিতা:

থানকুনি পাতায় থাকা প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, মুখের ঘা দূর করে, সর্দির জন্য উপকারী, পেটের অসুখে থানকুনির জুস বেশ কার্যকর। আমাশয়ের পাশাপাশি কাশি ও গলা ব্যথায় থানকুনি পাতার ভেষজগুণ অতুলনীয়। তাছাড়াও পেটের যে কোনো রোগ প্রতিরোধে থানকুনি পাতা ভীষণ উপকারী। আমাশয় থেকে আলসারের মতো রোগও নিরাময় হয় থানকুনি পাতার গুণে। এমনকি নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে হজমজনিত সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে সহজেই।

শরীরের কোথাও কেটে গেলে রক্তপাত থামাতে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। থানকুনি পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা উপশমের পাশাপাশি রক্ত পড়াও বন্ধ হয়।

অনেকের থ্রম্বোসিসের সমস্যা থাকে। অনেকের দেহেই অন্য শারীরিক সমস্যার কারণে রক্তপ্রবাহের সমস্যা দেখা দেয়। থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত বিশুদ্ধ থাকে। ফলে শরীরের প্রতি কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছায়। এতে শারীরিক নানা জটিলতা দূর হয়।

থানকুনির ম্যাডেকাসসাইড ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর করে। ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ত্বককে ভেতর থেকে ঠান্ডা ও প্রশান্ত করে। এতে ত্বকে সতেজভাব ফুটে ওঠে।

মানসিক অবসাদে ভুগলে তা দূর করার জন্য কার্যকর ভেষজ হলো থানকুনি পাতার রস। থানকুনি স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে মানসিক চাপ আর অস্থিরতা প্রশমিত হয়। ফলে অ্যাংজাইটির আশঙ্কাও কমে যায়।

নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস নামের একটি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ব্রেনসেল চমৎকারভাবে কাজ করতে পারে। স্মৃতিশক্তির উন্নতির সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বেড়ে যায়।

ঘুম না আসার সমস্যা অনেকেরই রয়েছে। কারও এমন সমস্যা থাকলে খেতে পারেন থানকুনি পাতা ভেজানো পানি। এতে স্নায়ু শিথিল হবে। ঘুমও দারুণ হবে।

থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর উচ্চমানের অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। তাই থানকুনি পাতার নির্যাস সমৃদ্ধ সৌন্দর্যপণ্য ক্লান্ত ভাব দূর করে আমাদের ত্বককে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে। থানকুনির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি (প্রদাহরোধী) উপাদান ব্রণের বিস্তৃতি কমায়। শুধু তা-ই নয়, ব্রণের দাগ দূর করতে থানকুনির নির্যাস দারুণ উপকারী।

থানকুনিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং সক্রিয় উপাদান ম্যাডেকাসসাইড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। এতে দূষণ ও সূর্যের রশ্মির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক অকালে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। শুধু তাই নয়, এটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়। ত্বকের বলিরেখা রোধ করতে এবং নমনীয়তা বাড়াতে কোলাজেন একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।

থানকুনির অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইটোক্যামিকেল ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জুগিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে ত্বক থাকে কোমল এবং ত্বকে বয়সের ছাপ কম দৃশ্যমান হয়।

এছাড়াও চুল পড়া নিরোধকারী পণ্যে অনেক সময় থানকুনির নির্যাস ব্যবহার করা হয়। এর অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

**এর অনেক উপকারিতার পাশাপাশি রয়েছে কিছু অপকারিতাও-

থানকুনি পাতা যেমন পেটের ব্যথা দূর করে তেমনি প্রয়োজনের বেশি খেলে পেটের ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। তাই পরিমিত খেতে হবে। প্রয়োজনের বেশি খেলে মাথা ঘোরাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের লিভারের সমস্যা আছে তারা থানকুনি পাতা কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। এতে শারীরিক নানা সমস্যায় পড়তে পারেন। অপারেশন করেছেন এমন রোগীদের থানকুনি পাতা না খাওয়ায় ভালো। থানকুনির পাতা থেকে অ্যালার্জি, খোশ-পাচড়াও হতে পারে। তাই খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/এস.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles