Saturday, February 8, 2025
spot_img
spot_imgspot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

ডেইলি শেয়ারবাজার ডেস্ক: গোটা পৃথিবীজুড়েই মসুর ডাল খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। মসুর ডাল দিয়ে তৈরি করা হয় নানা রকমের পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার। মসুর ডাল প্রোটিনের আধার বলে একে মাংসের বিকল্প হিসেবেও ধরা হয়। মসুর ডাল শুধু সুস্বাদুই নয় এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। কিন্তু পরিমানের অধিক খেলেই ঝামেলা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- মসুর ডাল স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে উপকারী। তবে বেশি পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস, হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই মসুর ডালের উপকারিতা এবং অপকারিতা উভই জেনে রাখা ভালো।

মসুর ডালের রয়েছে একাধিক উপকারিতা।

মসুর ডালকে ক্যালোরি এবং প্রোটিনের অনন্য সমন্বয় হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যকর এবং সঠিক পুষ্টি প্রদানে কার্যকর হতে পারে।

মসুর ডালের ফাইবারে আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি শরীরে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তাছাড়া এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়োমিত মসুর ডালের মতো উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হার্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাছাড়া মসুর ডাল ফলেট (folate) এবং ম্যাগনেসিয়াম এর একটা বিরাট উৎস, যা হার্টকে আরও বেশি তারুন্য পেতে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরের সর্বত্র রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি প্রবাহ করতে সাহায্য করে।

মসুর ডালে উচ্চ মাত্রার এটা দ্রবণীয় ফাইবার থাকে যা রক্তের কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দিয়ে ধমনীকে পরিষ্কার রাখে।

মসুর ডাল খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে বাড়িয়ে দেয় ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ।

মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ রয়েছে। ফলে এটি হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার।

মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই কারণেই মসুর ডাল ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ক্যান্সার এবং হৃদরোগ ইত্যাদির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

তবে মসুর ডাল বেশি পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে উপকার না হয়ে অপকারই হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে ডাল খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা তৈরি হতে পারে। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এই খাবার গ্যাসের সমস্যা তৈরি করার  পাশাপাশি তৈরি করে অ্যাসিডিটির সমস্যাও।

মসুর ডাল শরীরে গাউট বা ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই কোনো ব্যক্তি যদি বাতের ব্যথায় ভোগেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে তার মসুর ডাল ও মটরশুঁটি খাওয়া মোটেও উচিত হবে না।

মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লেকটিন। এই উপাদান শরীরের হজমশক্তিকে দুর্বল করে তোলে। যদি কোনো ব্যক্তি আইবিএস-এর মতো রোগে ভুগে থাকেন, তাহলে মসুর ডাল খাওয়ার কারণে তার স্বাস্থ্য অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।

মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। তাই ডায়েট লিস্টে এই খাবার তালিকাভুক্ত করলে শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। শারীরিক ব্যায়ামের অভাব হলে অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমতে শুরু করে। এতে ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

অবাক হলেও সত্যি যে- অধিক পরিমানে এই ডাল খেলে হতে পারে কিডনির সমস্যা। আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে ডাল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন, তবে এটি আপনার কিডনির ওপর সরাসরি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়া মসুর ডালে অক্সালেটের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এই খাবার বেশি পরিমাণে খেলে কিডনিতে পাথর তৈরি করে। তাই দৈনিক ৩০ থেকে ৬০ গ্রামের বেশি মসুর ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।

তাই ঝুঁকি কমাতে পরিমিত মসুর ডাল নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।

উল্লেখ্য, মসুর ডালে চচ্চড়ি থেকে শুরু করে ডালনা, নিরামিষ, পিঁয়াজু, ডালপুরি, ডালের স্যুপ, আম ডাল, পুঁই ডাল, পাট পাতার ডাল ইত্যাদি অনেক জনপ্রিয়। এছাড়াও এই ডালে রয়েছে খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি।

ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/এ.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles