ডেইলি শেয়ারবাজার ডেস্ক: তখন রাফিনহার বয়স কতইবা, বছর আটের শিশু। তখন থেকেই তাঁকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন বাবা রাফায়েল। সময়টা ২০০৩, তাদের শহর পোর্তো আলেগ্রি তখন ঘরের ছেলে রোনালদিনহোকে নিয়ে রীতিমতো আপ্লুত। বিশ্বফুটবলের এ তারকা তখন বার্সার হয়ে ফর্মের তুঙ্গে।
বন্ধু রোনালদিনহোর কাছেই তখন ছেলেকে নিয়ে যান রাফায়েল। একটি স্বপ্নের কথা বলেন তিনি বন্ধুকে। ‘আমার ছেলেটি যদি ফুটবলার হয়, তাহলে যেন একদিন তোমার মতো স্পেনের বার্সেলোনার হয়ে খেলতে পারে।
রাফিনহার কাছে তাঁর আঙ্কেল রোনালদিনহো শুধু আদর্শই নন, পারিবারিক আত্মীয়ও বটে। সেই রাফিনহাতেই এখন রোনাদিনহোর ছায়া পড়েছে বার্সেলোনায়। শনিবার লা লিগায় ভায়াদোলিদের বিপক্ষে গোল করে রাফিনহা তাঁর আঙ্কেলের একটি রেকর্ড ছাপিয়ে গেছেন।
বার্সার হয়ে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহো ২০০৫-০৬ মৌসুমে ৪৫ ম্যাচে ২৬ গোল আর ২৩ অ্যাসিস্ট করেছিলেন। মোট ৩৯ গোলে অবদান রেখেছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। সেখানে রাফিনহা এই মৌসুমে বার্সার হয়ে ৪৬ ম্যাচ খেলে ২৮ গোল আর ২২টি অ্যাসিস্ট করে মোট ৪০ গোলে অবদান রেখেছেন।
এদিন লা লিগার রেলিগেশন নিশ্চিত হয়ে যাওয়া ভায়াদোলিদের বিপক্ষে শুরুতে রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষা করেছিলেন। শুরুর একাদশে ৯ পরিবর্তন এনে ভিক্টর, রদ্রিগুয়ের মতো একাডেমির খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়েছিলেন ফ্লিক। যেহেতু সামনেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টারমিলানের বিপক্ষে ম্যাচ, তার ওপর আবার লা লিগায় এল ক্ল্যাসিকো রয়েছে, তাই দলের মূল তারকাদের বিশ্রামে রাখার পরিকল্পনাই ছিল বার্সা কোচের।
কিন্তু ম্যাচের ৬ মিনিটের মাথায় ইভান সানচেজের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক ভায়াদোলিদ। তাই একে একে ইয়ামাল, রাফিনহা, ওলমোদের মাঠে নামাতে বাধ্য হন ফ্লিক। আর তাতেই স্বমহিমায় বার্সা, ৫৪ মিনিটে রাফিনহা আর ৬০ মিনিটে লোপেজের গোলে ১-২ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা। ‘একাদশে এত পরিবর্তন আনার পর দুটি গোল, আমি হতাশ নই। এত বদল আনা হলে খেলার মানে কিছুটা প্রভাব পড়বেই। কয়েকজন ফুটবলারকে বিশ্রাম দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, এজন্য কিছু ভুল হয়ছে।
ম্যাচ শেষে ৩ পয়েন্ট পাওয়ায় খুশি ফ্লিক। সেই সঙ্গে ইনজুরি কাটিয়ে ২২২ দিন পর গোলরক্ষক টার স্টেগান মাঠে ফেরায় স্বস্তি ছিল বার্সা কোচের মধ্যে। দলে এত বদল আনার পরও কোচের ভরসা ছিল রাফিনহার ওপর। গোল করে সেই আস্থার মর্যাদা দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এক সময় রোনালদিনহোর ওপরই কোচ রাইকার্ডের আস্থা ছিল। তাই প্রায় কুড়ি বছর আগের সেই ব্রাজিলিয়ানকেই এবার যেন বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন রাফিনহা।
দু’জনের খেলার ধরনে অমিল রয়েছে অনেক। রোনালদিনহো অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার থেকে লেফট উইঙ্গার পজিশনে খেলতেন। মাঝমাঠ থেকে প্রতিপক্ষের ডিবক্স ম্যাজিক দেখাতেন তিনি। রাফিনহা সেখানে শুধুই একজন উইঙ্গার। খুব প্রয়োজন না হলে মাঝমাঠে তাঁর বিচরণ কম। তার পরও গোল করা আর করানোতে কীভাবে যেন মিলে যান দু’জন।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/এম আর.
Recent Comments