গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের ‘দোনবাস অঞ্চলে’ সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সবকিছু কেমন যেন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের খবরের পর থেকে ৮ কার্যদিবস শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক হারিয়েছে প্রায় ৫০০ পয়েন্ট। পুঁজিবাজারে প্যানিক ছড়িয়ে এক ধরণের ধস নামানো হয়েছে। যদিও বিশ্বের অন্যান্য শেয়ারবাজারে এ ইস্যুতে নেতিবাচক প্রভাব কেটে গেছে। কিন্তু দেশিয় পুঁজিবাজারে একই ইস্যু ছড়িয়ে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী বিনিয়োগকারী ফায়দা লুটে যাচ্ছে। সাইডলাইনে বসে থাকা বড় বিনিয়োগকারীদের কম দরে শেয়ার কেনার সুযোগের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোজার ইস্যুতে নতুন নির্দেশনা আনার জন্য বড় একটি গ্রুপ বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চাপ দিতে পুঁজিবাজারের সাপোর্ট লেভেল ভেঙ্গে ফেলতে চাইছে। তবে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ বর্তমান কমিশনের ওপর। কমিশনের চেয়ারম্যান পদে আসীন হওয়ার পর থেকে যেসকল আশার বাণী শুনিয়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছিলেন তার সবই ভেস্তে যেতে বসেছে।
আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা চরম আস্থাহীনতায় হাতে থাকা শেয়ার স্বল্প মূল্যে লসে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিনিয়োগকারীদের আস্থা আর বিশ্বাসের জায়গাটা আবারও নড়বড়ে করে দেওয়া হয়েছে। খোদ হাউজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আতঙ্কে রয়েছেন যে আরেকটি ২০১০-১১ বছরের ধস যেন না আসে।
আমাদের দেশ অ্যামেরিকা বা ইউরোপে নয়, রাশিয়ার সাথে আমাদের পুঁজিবাজারের সরাসরি কোন লেনদেন নেই। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আমাদের বাজারে এতোটা প্রভাব ফেলার কোন কারণও নেই। বাজারে কারা এতো সেল প্রেসার তৈরি করে অস্থিতিশীল করে তুলেছে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষে জানা ‘ওয়ান-টু’ এর ব্যাপার। তবুও তারা চুপ করে কেন রয়েছে তা বিনিয়োগকারীদের বোধগম্য নয়।
আগেও বিনিয়োগকারীরা জিম্মি ছিল এখনও রয়েছে। এভাবে ক্ষতিগ্রস্ততার সম্মুখীন আর কতকাল হতে হবে তা শেয়ারবাজারের ফাদাররাই ভালো জানেন।
তবে বিনিয়োগকারীরা যেভাবে ফুঁসে উঠছেন তাতে দীর্ঘদিন পর আবারও রেগুলার মানব-বন্ধন, আন্দোলন, ধর-পাকড়, চিঠি চালাচালি, সকাল-বিকাল বৈঠকের ফুলঝুঁড়ি ইত্যাদি শুরু হয়ে যাবে। অন্যদিকে সেই অদৃশ্য শক্তির কাছে আবারও পরাজিত হয়ে মাথা নিচু করে বিনিয়োগকারীদের থাকতে হবে।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/মাজ./নি.