ডেইলি শেয়ারবাজার ডেস্ক: কোকা-কোলার একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে দেশে এখন উত্তাল অবস্থা! ফিলিস্তিন ইস্যু টেনে চলছে কোকাকোলা বয়কটের ডাক। এমনকি বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়া অভিনেতাদের নিয়েও উঠেছে বয়কটের ডাক। এখানেই থেমে থাকেনি বিষয়টি, অনেকের ধারণা বিজ্ঞাপনটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন নাট্য নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি।
তিনি এর সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত নন বলে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন অমি। পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করলেও তাকে মানুষজন ভুল বুঝছেন বলেও জানালেন এই নির্মাতা। আর এই ভুল বুঝাবুঝির কারণে এই নির্মাতার আসন্ন প্রজেক্ট ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে ফের এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সবার ভুল ভাঙ্গানোর চেষ্টা করেছেন অমি। তিনি লিখেন, আপনারা তাদের (বিজ্ঞাপনটির অভিনয়শিল্পী) উপর অভিমান করে বলছেন, আমাদের এত কষ্টে বানানো ‘ফিমেল ৪’ দেখবেন না। বয়কট করছি ফিমেল ৪। আমি সবসময় চেষ্টা করি সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলতে, আমার কাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনের ছোট ছোট বিষয় তুলে ধরতে। তারই ধারাবাহিকতায় আমি বানিয়েছিলাম বিদেশ, কিডনি, দই, শেষমেশ এবং আপনাদের ভালোবাসায় আজকে আমি এখানে। আমি আবেগ আপ্লূত এবং কৃতজ্ঞ আপনাদের প্রতি। গত রোজার ঈদের পর থেকে আমরা টানা ১২ দিন হিট ওয়েভ এর মধ্যে ব্যাপক পরিসরে ‘ফিমেল ৪’ এর শুটিং করি এবং পুরো ইউনিটের সবাই মিলে কঠোর পরিশ্রম করি, শুধু মাত্র আপনাদেরকে বিনোদন দেওয়ার জন্য।
সবার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই পরিবারের একজন ভুল করলে সেই পরিবারের অন্য সদস্যদের শাস্তি দিবেন না। আমরা যারা একসাথে কাজ করি আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে আমি মনে করি। আমাদের পরিবারের কেউ যদি ভুল করে থাকে, সে তার ভুল বুঝতে পারে এবং সে যদি ক্ষমাপ্রার্থী হয়, অবশ্যই আমরা চাইবো তাকে যেন দেশবাসী এবং সাধারণ মানুষ ক্ষমা করে দেয়।
বিজ্ঞাপনটির প্রসঙ্গ টেনে অমি আরও লিখেন, ‘একটি বিজ্ঞাপনের সাথে সম্পৃক্ততা থাকে এজেন্সির, কোম্পানির এবং বিজ্ঞাপন নির্মাতার। গতকাল থেকে যে বিজ্ঞাপনের ইস্যুটি নিয়ে আমার দর্শক, আমার পরিবার ও দেশবাসী বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, আমি সবার কাছে একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই যে উক্ত বিজ্ঞাপনের সাথে আমি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। আপনারা আমার উপর রাগ করছেন, আবেগ আপ্লুত হচ্ছেন। আমি আপনাদের সকল রাগ-অভিমান মাথা পেতে নিচ্ছি। কারণ, বিজ্ঞাপনটির অভিনয়শিল্পী যারা আছেন তারা আমার সাথে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা অনেকেই হয়তো এই অভিনয়শিল্পীদের আমার পরিচালিত কাজের মাধ্যমে চেনেন। কিন্তু আমি শুধুমাত্রই এই অভিনয়শিল্পীদের পরিচালক, তাদের অভিভাবক নই। তারা ব্যক্তিগত জীবনে কি করবে, তা সম্পূর্ণই তাদের নিজস্ব ব্যাপার, আমার তাতে কোন হস্তক্ষেপ নেই। আমি একজন পরিচালক। কোন অভিনেতা- অভিনেত্রী যখন আমার প্রজেক্টে কাজ করতে আসে আমি শুধুমাত্র তাদের ডিরেকশন দেই। তাদের ব্যাক্তিগত জীবন, তাদের কাজ, তাদের পথ চলা- এর কোন কিছুর সাথেই আমার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। অবশ্যই তারা আমার টিম মেম্বার কিন্তু সেটা শুধুমাত্র যখন তারা আমার কাজ করবে তখন। এর বাইরে তাদের ব্যাক্তিগত জীবন আছে।
মানবতা ও বিবেক এ দুটি বিষয় একজন মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। আমি সব সময় চেষ্টা করি আমার কাজের মাধ্যমে মানবতা এবং বিবেককে জাগ্রত রাখতে—এমনটা জানিয়ে তাকে ভুল বুঝা থেকে বিরত থাকা এবং তার পরিশ্রমকে বিফলে না যেতে দেওয়ার অনুরোধ জানান কাজল আরেফিন অমি।
সবশেষে এই নির্মাতা বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে মিডিয়াতে আমার পথচলা। এই ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে আমি সবসময় চেষ্টা করেছি আমার দর্শকদের বিনোদন দেয়ার উদ্দেশ্যে কাজ করতে। আমার সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতেও গল্প এবং শিল্পী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি আমার দর্শকদের চাহিদা সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করবো। আশা করছি আপনারা কেউ আমাকে ভুল বুঝবেন না এবং আমার পরিশ্রমকে বিফলে যেতে দিবেন না। সকলের কাছে অনুরোধ, আমার কাজে কোনো অভিনয়শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন খুঁজবেন না। আমি কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাজ করি না। আমি আমার গল্পের চরিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি, যে চরিত্রগুলো আমাদের সমাজের প্রতিচ্ছবি।আমাদের পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/এম আর.