ডেইলি শেয়ারবাজার ডেস্ক: আবারও শতক ছুঁয়েছে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের দর। ছুটছে আলুর বাজার। ঝাঁজ বেড়েছে আদারও। তবে চাহিদা কম থাকায় ডিম ও মুরগির দর কিছুটা কমেছে। স্বাভাবিক রয়েছে সবজির বাজার।
কোরবানির ঈদের সপ্তাহখানেক আগে পেঁয়াজের দর শতকে উঠেছিল। এরপর ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে নেমে আসে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। এতদিন এ দরেই বিক্রি হয়েছে। এখন আবারও শতক ছুঁয়েছে পেঁয়াজ।
গতকাল শুক্রবার ঢাকার মালিবাগ, মহাখালী ও তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজারে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। দেশি হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজের বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে। তবে কারওয়ান বাজার বা যাত্রাবাড়ীর মতো বড় বাজারে উভয় ধরনের পেঁয়াজ এ দর থেকে পাঁচ টাকা কমে কেনা যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশি পেঁয়াজের সঙ্গে বাজারে এ সময় আমদানি করা পেঁয়াজও পাওয়া যেত। তবে এখন সেসব পেঁয়াজের দেখা নেই। ডলারের দর বেশি থাকায় আমদানি খরচ বেড়েছে। সে জন্য ব্যবসায়ীরা আমদানি করছেন কম। ফলে দেশি পেঁয়াজের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে সবাইকে। এ জন্য দাম বেশি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের বাজারদর অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এ দর ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের দর পড়ছে কেজিপ্রতি ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা।
বাজারে আরও বেড়েছে আদার দর। চায়না আদার কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা এবং দেশি আদার কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগেও দুই ধরনের আদার দর ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে ছিল। আগের মতো দেশি রসুন ২১০ থেকে ২৩০ এবং আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ডিম ও মুরগির বাজারে। চাহিদা কম থাকায় আমিষজাতীয় পণ্য দুটির দর কিছুটা নেমেছে। ফার্মের ডিমের ডজন কেনা যাচ্ছে ১৪৮ থেকে ১৫৫ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। আর সোনালি জাতের মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ পড়বে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা। মাসখানেক আগে ব্রয়লারের কেজি ১৯০ থেকে ২১০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা ছিল। কিন্তু উল্টো চিত্র গরুর মাংসের বাজারে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে।
ডালের বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি কেজি আমদানি করা মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১৫ এবং দেশি মসুর ডাল ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অ্যাংকর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। মুগডাল কিনতে কেজিতে খরচ পড়বে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা।
এক বছরে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে আলুর দর। খুচরায় এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৬ টাকা দরে; যা এক সপ্তাহ আগে কেনা গেছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।
কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, হিমাগার মালিকদের হিসাবে এবার আলু উৎপাদন হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টন। বছরে আলুর চাহিদা রয়েছে ৯০ লাখ টনের বেশি। সেই হিসাবে ঘাটতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টনের মতো। বর্তমানে হিমাগারগুলোতে ২৪ লাখ টনের মতো আলু মজুত আছে।
সবজির মধ্যে দাম বেড়েছে গাজর, শসা, বরবটি ও গোল বেগুনের। বেশ কয়েক দিন অস্থির ছিল কাঁচামরিচের বাজার। কয়েক দিন আগে ৩০০ টাকা ছুঁয়েছিল কেজি। তবে সে দর অনেকটা কমেছে। মানভেদে কাঁচামরিচের বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে।
মাছের বাজারে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। চাষের কইয়ের কেজি ২৫০ থেকে ২৮০, মাঝারি আকারের তেলাপিয়া ও পাঙাশের কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে রুই ও কাতলা কিনতে কেজিতে গুনতে হবে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/এম আর.