ডেইলি শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি ওইম্যাক্স ইলেকট্রোড লিমিটেড। তালিকাভুক্তির পর টানা ৪ বছর স্টকের নামে কাগজ ধরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধি করেছে। সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২১ সমাপ্ত অর্থবছরে মুনাফা হওয়া স্বত্ত্বেও কোন প্রকার ডিভিডেন্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি ওইম্যাক্সের পরিচালনা পর্ষদ। যেহেতু বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কোম্পানি কোন রিটার্ন দিতে পারেনি; তাই এর পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে ওইম্যাক্স ইলেকট্রোড ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করে। উত্তোলিত অর্থ দিয়ে কোম্পানির মূলধনী যন্ত্রপাতি ও ইক্যুইপমেন্টস ক্রয় এবং ব্যাংক ঋণ পরিশোধের কাজে ব্যবহার করা হয়। ওই সময়ে কোম্পানিটির পোস্ট-আইপিও পরিশোধিত মূলধন ছিল ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। তালিকাভুক্তির পর ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ স্টক, ২০১৮ সালে ১২.৫০ শতাংশ স্টক, ২০১৯ সালে ১২.৫০ শতাংশ স্টক এবং ২০২০ সালে ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড প্রদান করা হয়। এতে কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৬৭ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। তালিকাভুক্তির পর ৫ বছর অতিক্রম করলেও এখনো পর্যন্ত কোম্পানির কাছ থেকে কোন নগদ লভ্যাংশ পায়নি বিনিয়োগকারীরা।
এদিকে তালিকাভুক্তির সময় ওইম্যাক্সের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দেখানো হয়েছিল ২.০৯ টাকা। তালিকাভুক্তির পর সেই ইপিএস ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে মাত্র ৮ পয়সায় এসে ঠেকেছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগি বিনিয়োগকারীরা জানান, পুঁজিবাজার থেকে টাকা নিয়ে কোম্পানি তাদের মূলধনী যন্ত্রপাতি কিনেছে, ব্যাংক ঋণও পরিশোধ করেছে। এতে কোম্পানির আয় বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড পাওয়ার কথা। কিন্তু হয়েছে ঠিক উল্টোটা। কোম্পানির ক্যাশ সব তাদের কাছে রেখে বিনিয়োগকারীদের স্টকের নামে কাগজ ধরিয়ে দিয়েছে। তাই কোম্পানির ম্যানেজমেন্টে যারা রয়েছেন তাদের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের দাবি জানান তারা।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি এ.কে.এম মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকমকে জানান, পুঁজিবাজার থেকে ওইম্যাক্স ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। ব্যাংক থেকে যদি এই টাকা নিতো তাহলে সুদ হিসেবে হলেওতো তাদের টাকা দিতে হতো। কিন্তু পুঁজিবাজারকে তারা তামাশা বানিয়ে রেখেছে। বছর বছর স্টক ডিভিডেন্ড দিয়ে মূলধন বৃদ্ধি করেছে। এবছরতো কোন ডিভিডেন্ডও দেয়নি। এ কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট ব্যর্থ। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত হবে বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজারের স্বার্থে কোম্পানিটিকে স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করা।
এ ব্যাপারে ওইম্যাক্স ইলেকট্রোডের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কোম্পানি সচিব মো. সুজ্জল হোসাইন সজল ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকমকে জানান, কোম্পানি সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত ফান্ড না পাওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে পারেন নাই।
উল্লেখ্য, কোম্পানিটিকে পুঁজিবাজারে আনতে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/মাজ./নি